Blog

মার্কেটিং এর জন্য কনটেন্ট হিসেবে ভিডিও বেশ কাজের। ভিডিও মার্কেটিং এ আমি এখনও একেবারে বেসিক পর্যায়ে আছি। আমার মত যারা এই ফিল্ডে নতুন তাদের মাথায় প্রায়ই অনেক অনেক এলোমেলো প্রশ্ন ঘুরপাক খায়।
আমি নিজের সে প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে নিজেই উত্তর খুঁজার চেষ্টা করছি। অনেক এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েছি আর বেশ কিছু অভিজ্ঞতাও হয়েছে। যেগুলো শিখেছি সেগুলোর অনেক কিছুই নানান সময়ে অনেকের সাথে শেয়ার করেছি। আজ সে প্রশ্নগুলোর মধ্যে একেবারে উল্লেখযোগ্য ৬টি একসাথে এখানে লিখে দিচ্ছি। ভিডিও অ্যাডসেন্সের জন্য মনিটাইজ আর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং উভয় কাজের জন্য উপকারি হবে আশা করছি।
এইগুলো আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলা। কিছুক্ষেত্রে ভুল হতেই পারে, ভুল হলে অবশ্যই ধরিয়ে দিবেন আশা করি J
১. প্রশ্নঃ ভিডিও কন্টেন্টে আসলে কি দেয়া যেতে পারে বা বলা যেতে পারে?
 
   উত্তরঃ ভিডিওতে একজন ভিউওয়ারকে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে একেবারে পুরোপুরি ইনফোরমেশন দিয়ে দেয়া উচিৎ। যেন তার মনে আর কোনও প্রশ্ন না থাকে। সবগুলি ফিচার,উপকারিতা, সীমাবদ্ধতা এগুলো সহজভাষায় জানিয়ে দেয়া। প্রোডাক্টের ব্যাপারে অহেতুক বেশি মিথ্যে কথা বলা সেল করে আমার মতে ইথিক্সের বাইরে পড়ে। অনেকে হয়তো মিথ্যে ফিচার জেনে ঠকবে যেটা আসলে ঠিক না।
 
ভিউওয়ার এগুলো জেনে যখন লিঙ্কে ক্লিক করবে তখন কনভার্সন রেট ভাল হবে। কারণ সে অল্রেডি সব জেনেই লিঙ্কে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে একশন হবার সম্ভাবনা প্রবল।
২. প্রশ্নঃ ভিডিও মার্কেটিং এর জন্য ভিডিও লেন্থ কেমন হতে পারে?
 
  উত্তরঃ এটা নির্ভর করবে আপনার উপস্থাপনার উপর। যেমন আর্টিকেল মার্কেটিং এর বেলায় কেউ ৫০০ ওয়ার্ডে ভিজিটরকে কনভেন্স করে ফেলে আবার কেউ ১৫০০ ওয়ার্ডে সেটা পারে না। প্রাঞ্জলভাষায়, সহজ কথায় প্রোডাক্টের ভ্যালু বুঝাতে আপনি যত সময় নিতে পারেন। তবে ভিডিও বেশি বড় করলে মাথায় রাখতে হবে যেন ভিউওয়ারকে আপনি ভিডিওর শেষ অবধি ধরে রাখতে পারেন।
 
আমার ক্ষেত্রে যেটা দেখেছি, প্রোডাক্ট সেল করার জন্য ৩-৪ মিনিটের ভিডিও ভাল রেজাল্ট দেয়। সিপিএ অফারের ক্ষেত্রে দেড় থেকে ২ মিনিটের ভিডিও যথেষ্ট ভাল।
৩. প্রশ্নঃ ভিডিওতে ভয়েস দেয়া ভাল নাকি মিউজিক?
 
   উত্তরঃ ভিডিওতে অবশ্যই ভয়েস দেয়া ভাল। কারণ একজন ভিউওয়ার পুরাটা সময় হয়তো ভিডিওতে তাকিয়ে থাকবেনা, তখন যেন সে ভয়েস শুনেও ভিডিওর ভ্যালু বুঝতে পারে। ভিডিওতে ভয়েস অ্যাড করার জন্য অনেক ভাল ভাল প্রিমিয়াম সফটওয়্যার পাওয়া যায়।
ভিডিওতে যদি কেউ মিউজিক দিতে চান তবে অবশ্যই রয়ালিটি ফ্রি মিউজিক ইউজ করতে হবে। যেগুলো খুবই ক্যাচি এবং ভিডিওর সাথে যায় এমন মিউজিক সেলেক্ট করবেন। অ্যাডসেন্সের ক্ষেত্রে রয়ালিটি ফ্রি মিউজিকও মাঝে মাঝে থার্ড পার্টি ম্যাচড শো করে। কারণ এগুলো আগে কেউ না কেউ হয়তো ইউজ করেছে আর সেটা ইউটিউবের মিউজিক লাইব্রেরীতে ইন্ডেক্সড হয়ে আছে।
 
 
৪. প্রশ্নঃ অ্যাফিলিয়েশনের জন্য কি ধরণের ভিডিও বেশি কনভার্ট করে?
 
  উত্তরঃ আমরা অনেক ভিডিওতে দেখি কোনও কথা বার্তা নেই, ভিডিও প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু কিনো কিনো বলতে থাকে। এতে যে কেউ স্পষ্ট বুঝতে পারবে এটা চিপ মার্কেটার এর কাজ। এগুলো ভিডিওতে অনেকেই স্প্যাম/স্ক্যাম মার্ক করে রিপোর্টও করে থাকে।
 
ভিডিও বানানোর সময় নিজেকে চিন্তা করতে হবে ২ভাবে।
 
এক) কাস্টমার/ কনজিউমার এন্ড থেকে।
দুই) ব্র্যান্ড প্রমটর বা সেলস এজেন্ট হিসেবে।
একজন কাস্টমার বা কনজিউমার বেশিরভাগ সময় প্রোডাক্ট কেনার আগে পূর্বের কেনা কারো থেকে ফিডব্যাক বা রিভিউ পছন্দ করে। আপনি চাইলে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ইউজ করে সেটার উপর নিজের অনেস্ট রিভিউ তৈরি করতে পারেন কিংবা ইন্টারনেট থেকে সবচেয়ে ইউজফুল ফিডব্যাক দিয়েও রিভিউ করতে পারেন।
ব্র্যান্ড প্রমটর বা সেলস এজেন্ট হয়েও ভিওয়ারকে কনভেন্স করা যায়। আপনি নিজেই প্রোডাক্টের বিভিন্ন ফিচারস, ভ্যালু বর্ণনা করে তাদেরকে কিছু বোনাস সহ আপনার লিঙ্ক থেকে প্রোডাক্ট কিনতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। প্রোডাক্ট যদি ভাল হয় আর আপনি তাদেরকে গিফট বা বোনাসের আশ্বাস দেখান তাহলে সেই ভিডিও থেকে ভাল রেজাল্ট পাওয়া যায়।
৫. প্রশ্নঃ অ্যাডসেন্স নিয়ে কাজ করার জন্য প্রফিটাবল নিশ কি?
 
 উত্তরঃ রিসেন্টলি যারা হস্টেড অ্যাডসেন্সে কাজ শুরু করেছেন তাদের মধ্যে এই প্রশ্নটাই বেশি। অনেকেই সিপিসি ১ বা ২ সেন্টের বেশি পাচ্ছেন না। আর বেশিরভাগ ভিওয়ার পাচ্ছেন ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ থেকে যার কারণে সিপিসির এই অবস্থা।
 
দুনিয়াতে টপিকের কোনও অভাব নেই। ভাল ভাল রিচ কান্ট্রির মানুষদের কালচার ফলো করেন। তাদের লাইফ স্টাইল এনালাইসিস করেন। হাজার হাজার টপিক পাবেন। এমন অনেক টপিক পাবেন যেগুলো আমাদের বা এই উপমহাদেশের মানুষের চিন্তাতেও আসে না। এগুলো নিয়ে স্প্যামিং একেবারে হয় না বললেই চলে। সেগুলো টার্গেট করে ভিডিও বানান। সার্চ ভলিউম হয়তো কম কিন্তু কম্পিটিশনও কম।
৬. প্রশ্নঃ এক চ্যানেলে কয়টা ভিডিও রাখা যাবে?
 
  উত্তরঃ ইউটিউবে অনেক চ্যানেল দেখা যায় যেখানে শত শত ভিডিও আছে। কিন্তু আমাদের দেশে নিজেদের মধ্যেকার শত্রুর অভাব নেই। অনেকেই হিংসায় পড়ে চ্যানেলে রিপোর্ট করে। এজন্য একটা চ্যানেলেই সব ভিডিও রাখা একটু রিস্কি হয়ে যায়। হয়তো একটা ভিডিওতে স্ট্রাইক পড়লো বা কপিরাইট ক্লেইমের কারণে পুরো চ্যানেলটাই সাসপেন্ড করে দিল!
 
আমার মতে আলাদা আলাদা স্পেসিফিক নিশের জন্য আলাদা আলাদা চ্যানেল করা উত্তম। নিশ যত ডীপ ডাউন হবে তত টার্গেটেড ভিওয়ার পাওয়া যাবে।

আজ এই পর্যন্তই লিখলাম। আরও শিখবো, আরও শেয়ার করবো। ইনশাআল্লাহ্‌।
 
ভিডিও মার্কেটিং নিয়ে আমার আগের দু’টি লেখা এখানেঃ

YouTube Bring Updates In Their Community Rules – June 2015

You may also like

Leave a Comment