August 16, 2014
Tomay Ghire By Tahsan And Kona Bangla Lyricsআমার ডায়েরি লেখার স্মৃতি!
ডায়েরি।।।
ছোট থেকেই ডায়েরির ব্যাপারে ব্যাপক দুর্বলতা ছিল। আমার স্পষ্ট মনে আছে যখন আমি ক্লাস থ্রিতে পড়ি তখন প্রথম ডায়েরি পেয়েছিলাম। সেই সময় আসলে নিজের প্রিয় কবিতা, গান আর পরিচিতদের জন্মদিন লিখে রাখতাম। বিভিন্ন কালারের কলম কিনে আনতাম, মনের ইচ্ছা মত নিজের নাম ঢং চং করে লিখে পাতা ভরাতাম।
আসতে আসতে ডায়েরিতে লেখা জিনিসের টপিক চেঞ্জ হতে থাকে। ক্লাশ সিক্সে যখন পড়ি তখন ডায়েরিতে মজার মজার ধাঁধাঁ, কৌতুক আর মজার মজার প্রবাদ লিখতাম। সেই সময় অনেক বই পরতাম। আমরা একেবারে ছোটবেলা থেকেই গল্প, উপন্যাস, কমিকস পড়তাম। ক্লাসে আমরা অনেকেই বই কিনতাম আর হাতবদল করে সবারই পড়া হতো। ক্লাশের লাস্ট বেঞ্চে বসে বইয়ের ভিতর চাচা-চৌধুরীর কমিকস পড়তাম… সেকি মজার স্মৃতি। ক্লাস সিক্সে শুরু করলাম তিন গোয়েন্দা পড়া। কিছুদিন পর মাসুদ রানা আর সেবা প্রকাশনীর আরও কিছু বই। ঠিক সেই বছরেই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া কমসূচি শুরু হয়। ক্লাস টেন পর্যন্ত প্রতিবার অংশ নিয়েছিলাম আর পরপর ৩ বছর পুরষ্কার পেয়েছিলাম। সেখানে বই থেকে মজার মজার কথা লিখে রাখতাম ডায়েরিতে। আর এই ডায়েরি সবার কাছ থেকেই লুকিয়ে রাখতাম। কাউকেই দেখতে দিতাম না।
ক্লাস সেভেন থেকে পুরোপুরি ডেইলি ডায়েরিতে লিখার অভ্যাস হয়েছিল। যেটা কি’না ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার পর পর্যন্ত ছিল। আমার ট্র্যাঙ্কে এখনও ১১ টা ডায়েরি আছে। মাঝে মাঝেই খুলে পড়ি আর সেই সব দিনের কথা চিন্তা করে মজা পাই। কত্ত আনন্দ আর বেদনার কথা লিখতাম। ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগে আমি আমার ডায়েরিকেই বেস্ট ফ্রেন্ড বলতাম। আমার সবকিছুই ডায়েরিতে শেয়ার করতাম। সারাদিনের ঘটনা না লিখা পর্যন্ত আমার ঘুম আসতো না। ইন্টারের রেসাল্ট দেয়ার পর ডায়েরি লেখা কমে গেল। রেসাল্ট দেয়ার ২ মাসের মধ্যেই জবে ঢুকলাম। তখন আর শরীরে এনার্জি থাকতো না অফিসের পর লেখালেখি করতে। হঠাত কোন খুব ভালো বা খুব কষ্টের দিন গেলে ডায়েরিতে লিখি।
আমার নিজের ভুলগুলো আমার আগের লেখাগুলোই আমাকে ধরিয়ে দেয়। কিন্তু আগের মত লেখার ইচ্ছা হয়না এই যান্ত্রিক জীবনে আসার পর। মনে পড়ছেনা লাস্ট কবে একটা ভালো উপন্যাস পড়েছি। কবে মনের কথা গুলো ডায়েরিতে লিখেছি।
তিতুমির কলেজে ভর্তির পর আমার চাচাতো ভাইয়ের পিসিতে লেখালেখি করতাম গান শুনার সময়। কিন্তু ওগুলো একদিন সব ফরম্যাট পরে যায়। এরপর আমার নিজের পিসিতেও তেমন লেখালেখি করিনা।
অনেক মনে পরে ডায়েরি লেখার সময় সেই দিনগুলোর কথা। সেই উত্তেজনার কথা। কলেজের শেষ দিনের আগের দিন পুরো কলেজ ঘুরে ঘুরে স্যার-ম্যাডামদের আর বন্ধুদের অটোগ্রাফ নেয়ার কথা।
খুব ভালো লাগে নিজের স্মৃতিগুলো নেরেচেরে দেখতে।