April 10, 2014
স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব প্রকাশআজ আপনি কতজন কে ‘ধন্যবাদ’ বলেছেন?
আজ আপনি কতজন কে ‘ধন্যবাদ’ বলেছেন? আজকের এই লেখাটি আপনাকে এই প্রশ্ন করা থেকেই শুরু করলাম। আপাতত উত্তরটা তোলা থাক আপনার কাছেই।
‘ধন্যবাদ’ খুবই ছোট একটি শব্দ। কিন্তু ছোট হলেও এটার তাৎপর্য ও ভূমিকা বিশাল।
প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় যেই কয়েকটি আচরণ আমরা সচরাচরই করে থাকি,এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অন্য কাউকে তার সাহায্য কিংবা অবদানের জন্য ধন্যবাদ দেওয়া। সাধারণত কারো উপকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম হিসেবে ধন্যবাদ দেওয়ার নীতি প্রচলিত আছে ভদ্র সমাজে। তাই না?
কিন্তু এই ছোট একটি শব্দ কি আসলেই আমরা ঠিকমত ব্যবহার করি? এইটুকু ভদ্রতায়ও আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রায়শই কৃপণতা করে থাকি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অনুশীলন আমাদের জীবনে কতভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে সেটা হয়তো খেয়ালের অগোচরে থেকে যায়।
সামান্য সাহায্য থেকে শুরু করে বড় ধরণের যেকোনও অবদান সবক্ষেত্রেই কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ আমাদের সবার মন মানসিকতায় একটা ব্যপক পরিবর্তন এনে দিতে পারে। কোন মানুষ যখন তার কৃতকর্মের জন্য কারো কাছ থেকে ভালো কোনও কথা শুনে, কিংবা অন্ততপক্ষে একটা সুন্দর হাসির সাথে ধন্যবাদ পায় তখন সেটা পরবর্তীতে তাকে এমন আরও ভালো কাজের জন্য মনের ভেতরেই একটা উৎসাহ সৃষ্টি করে।
আমাদের প্রতিদিনের জীবনে আমরা কত মানুষের সাথেই না মিশি। তাই না?
ধরুন, সকালে বাসে করে অফিস যাচ্ছেন। আপনার বসার সমস্যা হওয়াতে আপনার পাশের জন আপনাকে একটু জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন। আপনি তাকে ধন্যবাদ বলুন। দেখুন তিনি কত খুশি হবেন। যদি বাসে বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে যান, তখন আপনার পায়ে ব্যথা লাগাতে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোকটি একটু সাইড হয়ে গেলেন। তখন তাকে ধন্যবাদ বলুন। উনার মাঝে একটা ভালো লাগা কাজ করবে।
মাঝেমধ্যেই আমরা রাস্তায় বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে নানান ঠিকানা জিজ্ঞেস করি। হতে পারে সেটা কোনও বাড়ির দারোয়ান, রিক্সাওয়ালা কিংবা রাস্তার কোনও পথচারী। উনার কাছ থেকে উত্তর পেয়ে একটা ধন্যবাদ জানিয়ে দিন। সেই ব্যক্তি পরবর্তীতে অন্য মানুষদের সাহায্য করতে উৎসাহ পাবে।
ঠিক তেমনি অফিসের কোনও কলিগের সাথে কাজ করছেন। তার কাছ থেকে কোনও কাজ পেয়েছেন যা করতে তার হয়তো অনেক কষ্ট হয়েছে। আপনি প্রেশার দেয়াতে প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে কাজ করছে। কাজ আদায় করার সময় হাসি দিয়ে তাকে ধন্যবাদ বলুন। দেখবেন যিনি কাজ করে দিয়েছেন তার মুখে বিরক্তি থাকবেনা। আপনার টিম মেম্বারদের মাঝে ‘ধন্যবাদ’ বলার চর্চা সবার মাঝে একটা প্রেষণা তৈরি করবে।
শুধু অফিসে কিংবা বাইরেও নয়; বাসাতেও এই অভ্যাস আপনার জীবনকে সুন্দর করে তুলে। রাস্তার পাশে দোকানে চা খেতে গিয়ে যদি দেখেন চা বেশ ভালো হয়েছে, দোকানদারকে একটা ধন্যবাদ দেন। সে এরপর থেকে আপনাকে চা পরিবেশন করতে সতর্ক হবে। বাসায় এসেও যদি দেখেন কেউ আপনাকে চা বা অন্য কিছু বানিয়ে দিচ্ছে তাকেও আপনি ধন্যবাদ জানান। আপনার জন্য করা তার এই পরিশ্রম মুহূর্তেই চলে যাবে।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা অনেক মহৎ একটি গুণ। এই ‘ধন্যবাদ’ শব্দের মাধ্যমে সুন্দর ভাবেই আপনি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারেন। দেখবেন জীবন হয়ে উঠবে বেশ সহজ এবং সম্পর্কগুলো হবে মধুর।
এখন চলে আসি এই লেখার একদম প্রথম লাইনে। আজ কত জনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন? যদি এখন পর্যন্ত কাউকে না দিয়ে থাকেন তাহলে দেরী না করে এখুনি প্রকাশ করে দিন।
আমার এই লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং যেকোনো মতামত নিচে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।