May 21, 2014
ইন্টারনেট মার্কেটারদের আড্ডা-২০১৪ এবং স্মরণীয় অভিজ্ঞতা!Experts With Asif – Rayhan Hossain Tee Shirt Marketer
আমার ব্লগের পাঠকদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি সেগমেন্ট চালু করেছি “এক্সপার্টস ইউথ আসিফ” নামে। এখানে আমি বাংলাদেশের অনলাইন প্রফেশনালদের মধ্যে এক্সপার্ট লেভেলের কয়েকজনের সাথে কথা বলে সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
টি শার্ট মার্কেটিং এখন বাংলাদেশের অনলাইন প্রফেশনালদের জন্য খুবই জনপ্রিয় এবং নতুন একটা সেক্টর। এখানে অনেকেই সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
আজ আমি রায়হান হোসেইন ভাই এর সাথে কিছু আলাপ শেয়ার করছি আপনাদের সাথে। উনি বেশ কিছুদিন ধরেই সফলতার সাথে অনলাইনে টি শার্ট মার্কেটিং এর জড়িত আছেন।
কেমন আছেন রায়হান হোসেন ভাই?
ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ্
আপনি মূলত কি কাজ করেন?
আমি পেইড এডভার্টেইজিংয়ের মাধ্যমে টিশার্ট সেল করে থাকি বিভিন্ন প্রিন্ট অন ডিমান্ড প্লাটফর্মে। এটি ইকমার্সেরই একটি অংশ।
কবে এবং কিভাবে এই পেশায় এলেন?
২০১১ সালে অনলাইনে আয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলাম রাসেল ভাইয়ের একটি আর্টিকেল থেকে। তারপর বিভিন্ন পথ ঘুরে রিফাত ভাইয়ের এফিলিয়েট কোর্স নেয়া আর তারপরই ধীরে ধীরে অনলাইনে আয়ের এই মাধ্যমে আসা। অনলাইনে আয়ের আগ্রহ থাকলেও একশন না নেয়ার কারণে আয়ের মুখ দেখতে দেখতে সময় গড়িয়ে ২০১৫ সাল হয়ে গিয়েছিলো।
কি কি স্কিল থাকলে এই কাজে ভাল ফলাফল আনা সম্ভব?
প্রিন্ট অন ডিমান্ড একটি অসাধারণ বিজনেস মডেল। এখানে আগে থেকেই ইনভেস্ট করা লাগেনা, ইনভেন্টরী লাগেনা। ড্রপশিপিং মডেল বিজনেসের যুগান্তকারীরুপ হচ্ছে এই মডেল। সবার আগে যে স্কিলটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে ডিজাইনের থিমের উপর ভিত্তি করে অডিয়েন্স বা সম্ভাব্য কাস্টোমারকে আলাদা করে চিনতে পারা এবং সেইভাবে ফেসবুকে টার্গেট করা। কেউ যদি ডিজাইনে ভালো হয়ে থাকেন তাহলে সেটা তার জন্য প্লাস পয়েন্ট কিন্তু ডিজাইন না জানলেও হবে শুধু জানতে হবে কিভাবে আদর্শ অডিয়েন্স ফেসবুক থেকে ছেঁকে বের করা যায়। আর কি কি উপায়ে ক্রস বা রিভার্স টার্গেটিং করা যায় একটি প্রোডাক্টকেই। বিভিন্ন সাইট এখন নিজের ডোমেইনের মাধ্যমে প্রোডাক্ট সেল করার সুযোগ দিচ্ছে, এক্ষেত্রে এসইও জ্ঞান সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। সঠিক মনমানসিকতা আর ধৈর্য্য ধরে কাজ করলে এতে সাফল্য পেতে তেমন কোন সমস্যা হবেনা।
এই পেশার স্থায়িত্বকাল কেমন হতে পারে?
কাস্টোমাইজড প্রোডাক্টের প্রতি আমাদের দূর্বলতা অনেক বেশী। একটি প্রোডাক্ট যেটি আমার ব্যক্তিত্ব আমার চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটায়, যা পরিধাণের মাধ্যমে আমি আমার বন্ধুমহলে বাহবা পাবো আমি চাইবো সেই ধরণের প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করার জন্য। আর এই বিজনেস মডেল আমাদেরকে সুযোগ করে দিচ্ছে ঠিক এরকম নিশ মানুষদের জন্য তাদের মনের মতন প্রোডাক্ট পৌঁছে দেয়ার। সেহেতু এ ধরণের বিজনেসের চাহিদা অসীম। এখন পর্যন্ত আমেরিকা কিংবা ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে বাজারজাত করা হলেও এর চাহিদা বিশ্বব্যাপী। এমনও অনেক দেশ আছে যেগুলো আনটাচ্ড। অর্থাৎ এখনো তাদের কাছে কোন মার্কেটার তার প্রোডাক্ট নিয়ে পৌঁছায় নি। তাই দিনদিন এর মার্কেট বাড়ছে বই কমছেনা। যদিও ধীরে ধীরে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে মার্কেটারদের আধিক্যের কারণে কিন্তু তারপরও ফেসবুক বাদেও অন্যান্য অনেক মাধ্যম আছে যেগুলো থেকে চাহিদা মোতাবেক ট্রাফিক আনা সম্ভব।
টাকা উত্তোলনের ঝামেলা কেমন?
টাকা উত্তোলনের ঝামেলা তেমন নেই বললেই চলে। এখন প্রতিটি প্লাটফর্মের সাথেই পেওনিয়ার ইন্টিগ্রেট করাই থাকে। আর চাইলেই চেকে পেয়মেন্ট নেয়া যায় তবে পেওনিয়ারই আমাদের জন্য বেস্ট।
এই কাজে রিস্ক কতটুকু?
আমি আগের প্রশ্নের উত্তরেই বলেছি বিজ্ঞাপণের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। ঊর্ধ্বমুখী ব্যয় এবং ফেসবুকের নিরন্তর এলগোরিদমে পরিবর্তনের কারণে এখানে কাজ করাটা অনেক বেশী ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এখন একটি এড অপ্টিমাইজড হতেই সময় নেয় ৩ দিন। এর ভিতর যদি পজিটিভ আরওআই না আসে সেক্ষেত্রে লসের পাল্লা ভারী হতে থাকে। তাই লস সহ্য করার মতন পর্যাপ্ত বাজেট নিয়েই এই বিজনেসে নামা উচিৎ। যেটি বর্তমানে অনেকেই করে থাকেন না।
আপনি নিজেকে এখন পর্যন্ত কতটুকু সফল মনে করেন?
হা—হা—হা! আমার মনেহচ্ছে প্রশ্নটি হওয়া দরকার ছিলো, “আপনি নিজেকে এখন পর্যন্ত কতটুকু অসফল মনে করেন?”
আমি নিজেকে সফলের কাতারে ফেলতে রাজী নই। এখন পর্যন্ত বুকফুলিয়ে বলার মতন তেমন কোন অর্জন নেই।
আমরা জেনেছি আপনি অনেক মাস্টারমাইন্ড গ্রুপ এবং ফোরামের সাথে জড়িত আছেন, এগুলো উপকারিতা কি?
হ্যাঁ, আর মূলত এই ধরণের মাস্টারমাইন্ড গ্রুপগুলোই আমাকে সাহায্য করেছে মাইন্ড সেটআপের ক্ষেত্রে। আমি জানতে পেরেছে এডের বহুবিদ ফ্যাক্টরসগুলো সম্পর্কে। বিজনেসের আজ-কাল-ভবিষ্যত সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছি এইগ্রুপ গুলোর জন্যই।
উপকারিতা অনেক, যেহেতু এইগ্রুপ গুলো পেইড অথবা পারস্পারিক বাস্তবিক জ্ঞান নিয়ে গড়ে উঠে সেহেতু এখান থেকেই জ্ঞান অনেকবেশী আহরণ করা যায়। আমাদের দেশে এই প্র্যাক্টিস অনেক কম। সমপর্যায়ের মার্কেটারদের উচিৎ নিজেদের মাঝে গ্রুপ গড়েতোলা এবং নিজেরাই নিজেদের মাঝে জ্ঞান বিতরণ করা। গ্রুপ পর্যায়ে বিভিন্ন স্প্লিট টেস্ট করে সিদ্ধান্ত নেয়া। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি মানসিক ভাবেও প্রশান্তি লাভ করা যায়।
ফেসবুক অ্যাড ক্যাম্পেইন সেটাপের কিছু অ্যাডভান্স টিপস শেয়ার করতে পারেনঃ
ফেসবুকে এখন ভিডিও এড অনেক বেশী চলছে। কম খরচে বেশী রিচ এবং কনভার্সন পাওয়ায় এর জুড়ি নেই।
এখন তো সবাই অনলাইনে কাজ করার জন্য অনেক বেশি আগ্রহী, তো অনলাইনে এই কাজ করতে যারা আগ্রহী তাদেরকে কি পরামর্শ দিবেন?
নিজেকে জানুন, জাম্প করা থেকে বিরত থাকুন এবং অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করা। আপনি কি চাচ্ছেন সেটি আগে জানুন। যদি নিজের মন মতন ফিল্ড না পান তাহলে কাজ করে বা শিখে মজা পাবেন না আবার একই সাথে যদি এক সাবজেক্ট থেকে আরেক সাবজেক্টে জাম্প করতে থাকেন তাহলে আজীবন জাম্পিংই করে যাবেন কিছু শিখতে পারবেন না। আমি ২০১১ সালে শুরু করলেও নিজের মন মতন সাবজেক্ট পেয়েছি ২০১৪ সালের শেষে এসে। আর আয় আশা শুরু হয়েছে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে। আর অলিতে গলিতে গজিয়ে উঠা ট্রেইনিং সেন্টারগুলো অনলাইনের কাজকে যেভাবে ছেলের হাতের মোয়া বলে বেড়াচ্ছে আসলে তা মোটেই মোয়া না। সঠিকজ্ঞান না থাকলে আয় করা কখনোই সম্ভব না।
টি-বিজনেসে আপনার একটা গোপন সফলতা শেয়ার করুন যেটা আপনার কাছের কেউ ছাড়া জানে নাঃ
টি-বিজনেস আমাকে যথেষ্ট দিয়েছে। আর এর উপর ভরসা করেই আমার দীর্ঘ নয় বছরের প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশে চলে এসেছি। আমি আসলে এখানে কোন এমাউন্ট এই কারণেই উল্লেখ করতে চাচ্ছিনা যাতে কেউ প্রলোভন হিসেবে এটিকে না নেন। লেগে থাকলে সাকসেস আসবেই আর সাকসেস আসলেই টাকা আসবে। সুতরাং লেগে থাকুন, আল্লাহ’র উপর ভরসা রাখুন, দিন সবারই আসে আপনারও আসবে।
অনেক ধন্যবাদ রায়হান ভাই আমাদের সাথে এত ডিপ ইন্সাইট কিছু ইনফরমেশন শেয়ার করার জন্য 🙂
Clipping Path Service8 years ago
Highly creative post, thanks for such a very informative post, really incredible.
Zakir Hossain8 years ago
অসাধারণ! ধন্যবাদ এমন সাক্ষাতকার উপহার দেয়ার জন্য।
নজরুল ইসলাম মাসুম8 years ago
অনেক ভালো তথ্য-উপাত্তের মিশ্রণ। জীবনমুখী। অসাধারণ।
আবদুল্লাহ6 years ago
খুব সুন্দর সাক্ষাৎকার। সকলকে ধন্যবাদ।
niravasif6 years ago
অনেক ধন্যবাদ ভাই 🙂